বিশেষ প্রতিনিধি:
রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার রাজাবাড়ী ইউনিয়ন ভূমি অফিসের ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা রবিউল ইসলামের বিরুদ্ধে পদে পদে ঘুষ-দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
অভিযোগ উঠেছে রাজাবাড়ী ইউনিয়ন ভূমি অফিসে রবিউল ইসলাম যোগদানের পর থেকে অনিয়মকে নিয়মে পরিণত করেছেন। সেবা প্রার্থীরা বলছেন, দালাল ছাড়া এই ভূমি অফিসে কোন কাজ হয় না এবং ঘুষ ছাড়া একটি ফাইলও নড়ে না। এতে করে প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে তাদের।
সরজমিনে অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে রাজাবাড়ী ইউনিয়ন ভূমি অফিসের নানা অনিয়ম-দুর্নীতি, হয়রানি ও ঘুস বাণিজ্যের ভয়াবহ সব চিত্র। সেবা প্রার্থীদের অভিযোগ ঘুষ দিলে এই অফিসে কোন কাজই অসাধ্য নয়। জমির বৈধ মালিক যেই হোক, চাহিদা মতো টাকা এবং দাগ খতিয়ান নম্বর দিলেই তা হয়ে যায় অন্যের। আবার বৈধ কাগজপত্র থাকা সত্ত্বেও ঘুসের রেটে হেরফের হলে প্রকৃত জমি মালিকদের নানা হয়রানির শিকার হতে হয়।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, নাম প্রস্তাব (নামজারি) খাজনা দাখিল থেকে শুরু করে সব কিছুতেই এখানে ঘুষ লেনদেন হয়। বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে আসা সেবাপ্রার্থীদের প্রকাশ্যেই ঘুষের অঙ্ক নির্ধারণ করে দেয়া হয়। রাজাবাড়ী ইউনিয়ন ভূমি অফিসের অবৈধ লেনদেনকে ঘিরে এই অফিস কেন্দ্রিক গড়ে উঠেছে শক্তিশালী দালাল সিন্ডিকেট ।
এসব দালাল সরকারি কর্মচারীর মতো বিভিন্ন রেকর্ডপত্র নাড়াচাড়া করে। দেখে বোঝার উপায় নেই এরা বাইরের লোক। অভিযোগ রয়েছে এসব দালাল ভুল ও মিথ্যা তথ্য সংযোজন করে পুনরায় তা ঠিক করে দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট ভূমি মালিকের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছেন মোটা অংকের টাকা।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, এ ভুমি অফিসে একাধিক দালাল সক্রিয় রয়েছে। এরা নানাভাবে নিয়ন্ত্রণ করছে ভূমি সংক্রান্ত কাজকর্ম। এসব দালালদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে সেবা নিতে আসা সাধারণ মানুষ।
ভুক্তভোগীরা বলছেন, অনলাইনে আবেদনের মাধ্যমে বাড়তি ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে তাদের। অনলাইনে আবেদনের পর আবার মূল কাগজপত্র নিয়ে ভূমি অফিসে যোগাযোগ করতে হয়। তখন বাড়তি টাকা না দিলে অনলাইনে ঝুলে থাকে তাদের ফাইল। এভাবেই প্রতিনিয়ত সেবা প্রার্থীদের জিম্মি করে রাজাবাড়ী ইউনিয়ন ভূমি অফিসকে ঘুস-দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত করেছেন ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম ।
ঘুষ লেনদেনসহ বিভিন্ন অনিয়মের বিষয়ে জানতে চেয়ে ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা রবিউল ইসলামের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন না ধরায় বক্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে গোদাগাড়ী উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) শামসুল ইসলাম মুঠোফোনে বলেন, অভিযোগটি খুবই গুরুতর এ ধরনের অনিয়মের কোন সুযোগ নেই। এ বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন তিনি।